আর্থ্রাইটিস কে বাংলায় বাত বলা হয়ে থাকে। এর অর্থ অস্থিসন্ধির প্রদাহ, যা মুলতঃ অস্থিসন্ধিকে আক্রান্ত করে থাকে। এছাড়াও হাড়ের প্রদাহ, ক্ষয় রোগ, লিগামেন্ট ও টেন্ডনের ব্যথা, মাংসপেশীর ব্যথা, মেরুদণ্ডের প্রদাহ, ক্ষয়, আড়ষ্ঠতা এগুলোও বাতরোগের অন্তর্ভুক্ত।প্রায় সব বয়সের মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে যে, আমাদের দেশে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ লোক বাত ব্যথা রোগে ভুগছেন। নারীদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ অনেক বেশি, প্রায় ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ। বাত-ব্যথার কষ্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কোমর ব্যথা। যার হার ২১ দশমিক ২ শতাংশ।
বিভিন্ন কারনে এই বাত রোগ হতে পারে। বয়স জনিত কারন, অতিরিক্ত ওজন, বংশগতি, আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া, জীবাণুর সংক্রমণ, বিভিন্ন পুষ্টিগত উপাদান যেমন ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব ইত্যাদি বাত রোগের জন্য দায়ী হতে পারে।
বাত-ব্যথা গ্রুপে প্রায় শখানেক রোগ আছে। প্রায় সব বাত রোগেরই সাধারণ উপসর্গ হল বিভিন্ন মাত্রার ব্যথা, অস্থি-সন্ধির ফুলে যাওয়া, শক্ত হয়ে যাওয়া, আড়ষ্টতা এবং গিঁটের চারপাশে স্থায়ী যন্ত্রণা। এছাড়াও হাত-পায়ের ব্যবহারে অসুবিধা হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, ভালো ঘুম না হওয়া, পেটের সমস্যা, চর্মরোগ ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যা নিয়ে রোগী চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন।
আর কিছুদিন পরেই আমাদের দেশে শীতের আগমন ঘটবে। শীতে বাতের ব্যথা অনেক সময় বেড়ে যায়। এই সময়টিতে গরম কাপড় পরা, যথেষ্ট পরিমাণ তরল খাবার খাওয়া যেন পানিশূন্যতা না হয়,গরম পানি দিয়ে গোসল করা, ব্যয়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা,দিনে অন্ততঃ ১৫ মিনিট থেকে আধাঘন্টা রোদে থাকা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার যেমন ডিম,তৈলাক্ত মাছ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে বাতের ব্যথা বেদনা অনেকটাই কম রাখা সম্ভব।
আজ ‘ওয়ার্ল্ড আর্থ্রাইটিস ডে’। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘বাত ব্যথা নিয়ন্ত্রণের এখনই সময়’। সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারলে অধিকাংশ জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
কিংস্টন হাসপাতাল বাত-ব্যথার চিকিৎসায় সবসময়েই আপনার পাশে আছে। ধন্যবাদ।